Top News

এক হাত নিয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফিরলেন আতিকুল

 

এক হাত নিয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফিরলেন আতিকুল


১৮ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন আতিকুল ইসলাম

আতিকুল ইসলাম, ১৯ বছর বয়সী তরুণ, ডান হাত কনুইয়ের ওপর থেকে কাটা হলেও তাঁর মুখে হাসি লেগেই আছে। তিনি বলেন, “এক হাত কেটে ফেলতে হয়েছে তো কী হয়েছে, আরেকটা হাত আছে। জীবনটাও আছে। অনেকেই তো জীবনটাই হারিয়ে ফেলছেন। আর দেশের প্রয়োজনের সময় কিছু করতে পারলাম, এটাই তো অনেক।” বারবার ব্যার্থ সাব্বির রহমান

গত ৫ আগস্ট, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানার কাছে আতিকুলের হাতে গুলি লাগে। তখন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তিনি ছিলেন। পরে তাঁকে পাঁচটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসকরা তাঁর হাত থেকে গুলি বের করেন। ৬ আগস্ট তাঁকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়।
১৮ সেপ্টেম্বর, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান আতিকুল ইসলাম। তিনি এক হাত নিয়ে হাসিমুখে পঙ্গু হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন। বাড়ি ফেরার আগে, বেলা তিনটার দিকে হাসপাতালের নিচে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। আতিকুল হাসপাতালের ‘বি-ওয়ার্ড, বেড নং ৩৯’-এর রোগী ছিলেন এবং গলায় ঝুলানো ছিল স্বজনদের জন্য হাসপাতালের দেওয়া ‘অ্যাটেনডেন্ট পাস’।

মা-বাবা বাড়ি চলে যাওয়ার পর, তিনি একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আহত আরও কয়েকজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন।

এই প্রতিবেদককে সঙ্গে নিয়ে আতিকুল আবার হাসপাতালের বি-ওয়ার্ডে গেলেন। হাসিমুখে নিজের খালি বিছানা দেখিয়ে বললেন, “এ বিছানাতেই ছিলাম।” হাসপাতালের লিফট থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যন্ত যেতে তিনি অনেকের সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন। সেখানে ভর্তি অন্য আহতদের কাছ থেকে বিদায় নিলেন।

এক চিকিৎসক সেলফি তুলতে এসে বললেন, “আমি অন্য ওয়ার্ডের দায়িত্বে আছি, কিন্তু শুনেছি আপনি বাড়ি যাচ্ছেন, তাই দেখা করতে এলাম।” আতিকুলকে বিদায় জানালেন তাঁর ওয়ার্ডের নার্স এবং অন্যান্য স্টাফরাও। তাঁদের আন্তরিকতা এবং সমর্থন আতিকুলকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে।

আতিকুল বলেন, ‘প্রথমে বেসরকারি একটি হাসপাতালে গুলি বের করার পর ১৮ ঘণ্টা পার হলেও আমার কোনো চিকিৎসাই হয়নি। ততক্ষণে হাতের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটের অস্ত্রোপচারকক্ষে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, হাত কাটা ছাড়া গতি নেই। তাঁরাই পঙ্গু হাসপাতালে যেতে বলেন। পরে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হলে চিকিৎসকেরা হাত কেটে ফেলতে বাধ্য হন।’

Post a Comment

Previous Post Next Post